ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে স্কোয়াডে থেকেও ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। পুরো সিরিজে হাসান মাহমুদকে কাটাতে হয়েছে ডাগআউটে। একই দলের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে দুর্দান্ত পারফর্ম করে দেখিয়েছেন, ওয়ানডে সিরিজে তাকে বসিয়ে রেখে কতবড় ভুল করেছে টিম ম্যানেজমেন্ট।
এরপর আয়ারল্যান্ড সিরিজেও প্রথম ম্যাচে তাকে বসিয়ে রেখেছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। দ্বিতীয় ম্যাচে একাদশে সুযোগ মিললেও বৃষ্টিতে ম্যাচ ভেসে যাওয়ায় পাননি বোলিংয়ের সুযোগ।
তৃতীয় ম্যাচে এসে বল হাতে নিয়েই আয়ারল্যান্ডের ব্যাটারদের উপরই যেন জমে থাকা সব ক্ষোভ ঝাড়লেন হাসান। নিজের অষ্টম ওয়ানডে ম্যাচ খেলতে নেমেই প্রথম ওয়ানডে ফাইফারের দেখা পেয়ে গেলেন এই তরুণ পেসার।
৩২ রানে তার শিকার ৫ উইকেট নিয়ে রীতিমতো আইরিশ ব্যাটিং লাইনআপকে ধ্বসিয়ে দিয়েছেন হাসান। তার ইতিহাসের দিনে বাকি দুই পেসার তাসকিন আহমেদ নিয়েছেন তিন উইকেট আর ইবাদতের শিকার এক জোড়া। সবমিলিয়ে আইরিশদের দশ উইকেটের সবকটিই ভাগ করে নিয়েছেন টাইগারদের পেসত্রয়ী।
এর আগে ইনিংসে পেসারদের নেওয়া সর্বোচ্চ উইকেট ছিল ৮টি। এবারই প্রথম বাংলাদেশের পেসাররা প্রতিপক্ষের ১০ উইকেট পেয়েছে। স্পিনার নাসুম আহমেদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ মিলে ৪ ওভার হাত ঘোরালেও উইকেট পাননি। এর চেয়ে বিষ্ময়কর তথ্য, দলের অন্যতম সেরা বোলার স্পিনার সাকিব আল হাসান এদিন বল হাতে নেওয়ারই সুযোগ পাননি।
টানা তিন উইকেট নিয়ে আইরিশ শিবিরে প্রথম ধাক্কা দিয়েছেন হাসান মাহমুদ। প্রথম স্পেলে তার বোলিং ছিল এরকম ৬-১-২৩-৩। প্রথম পাওয়ার প্লেতে শেষ উইকেট নিয়ে তার সঙ্গে যোগ দেন তাসকিন আহমেদ।
মিডল ওভারে তাদের সাথে যোগ দেন আরেক পেসার ইবাদত হোসেন। দলীয় ৬৮ রানে ইবাদতের জোড়া ধাক্কায় আবারও খাঁদের কিনারায় চলে গিয়েছে দলটি। ইনিংসের ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে টেকরকে ফিরিয়ে প্রথমে প্রতিরোধ ভাঙেন তিনি। পরের বলে জর্জ ডকরেলকে ফিরিয়ে আবারও আইরিশদের চাপে ফেলে দেন এই ডানহাতি পেসার।
২৫তম ওভারে যখন দ্বিতীয় স্পেলে ফেরেন হাসান। তবে এর আগে তাসকিন শিকার করেছেন আরও দুই উইকেট। আয়ারল্যান্ড তখন আট উইকেট হারিয়ে বসে আছে, পাঁচ উইকেট পাবেন কিনা সেটা নিয়েও সন্দেহ ছিল। কারণ অন্যপ্রান্তে সমান তালে আগুন ঝড়াচ্ছিলেন তাসকিন।
কিন্তু ইতিহাস গড়ার দিনে হাসানের ভাগ্যেই ফাইফার লিখা ছিল। প্রথমে কার্টিস ক্যাম্পারকে বাউন্সারে কাবু করে নিজের সেরা বোলিং ফিগারের দেখা পান তিনি। এরপর রের ওভারেই পেয়ে প্রথম ফাইফারের দেখা পান হাসান।
গ্রাহাম হুমকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেছিলেন হাসান, তবে আম্পায়ার আবেদনে সাড়া দেননি। এরপর তামিম ইকবাল রিভিউ নিলে বড় স্ক্রিনে রিপ্লে দেখেই হাসান মাহমুদ বুঝে যান ফাইফার সম্পন্ন হয়েছে। এরপরই তাকে ঘিরে উল্লাসে মেতে ওঠে দলের বাকি সদস্যরা।